bengali

জাতীয় পুরস্কার ’ শিক্ষারত্ন ’ র জন্য নাম পাঠাতে এবার থেকে জোর দেওয়া হবে চরিত্রগত সার্টিফিকেটের ওপর

webdesk | Saturday, June 3, 2017 10:32 AM IST

' শিক্ষারত্ন ' পুরস্কার পাওয়ার জন্য এবার শুধু ডিআই-এর ওপর ভরসা রাখলে চলবে না। গত বছর শিক্ষারত্ন পুরস্কারের জন্য একাধিক শিক্ষকের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার এক শিক্ষক, যাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছিল। একেবারে শেষ মুহূর্তে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায়। অস্বস্তি ঢাকতে ওই শিক্ষকের নাম তড়িঘড়ি তালিকা থেকে বাদ দিতে বাধ্য হয় সরকারকে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার আরও সতর্ক হচ্ছে শিক্ষা দপ্তর। 
ভবিষ্যতে জাতীয় পুরস্কার বা ' শিক্ষারত্ন ' পুরস্কারের ক্ষেত্রে এমন তালিকা তৈরির সময় শুধু জেলা পরিদর্শকদের রিপোর্টের উপর ভরসা না করে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে আলাদা করে সেইসব শিক্ষকের সম্পর্কে রিপোর্ট চাওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট পাঠাতে হবে তাঁদের। 
নিয়ম অনুযায়ী, জাতীয় পুরস্কারের জন্য প্রাথমিক-উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে ১৫ জন এবং মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের আট শিক্ষকের নাম চূড়ান্ত করে দিল্লিতে পাঠাতে হয়। তার জন্য অবশ্য কোন জেলা থেকে কতজনের নাম পাঠাতে হবে, তার একটি তালিকাও তৈরি করে দিয়েছে শিক্ষা দপ্তর। যেমন, কলকাতা থেকে সবস্তরের শিক্ষক মিলিয়ে আটজনের নাম পাঠাতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ১৩ জন, হুগলি থেকে ১০ জন ইত্যাদি। এই নাম কারা পাঠাবে, তার জন্য প্রতিটি জেলায় একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তারাই নাম পাঠাবে দপ্তরে। তার সঙ্গে জেলা পরিদর্শকদের বলা হয়েছিল, প্রত্যেক শিক্ষকের চরিত্রগত একটি সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। অর্থাৎ, তাঁর নামে কোনও মামলা বা পুলিশে অভিযোগ আছে কি না, তা জানিয়ে ওই সার্টিফিকেট দিতে হবে। 
এমনকী এই পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে কী কী নথি দিতে হবে, তার একটি তালিকা তৈরি করেছিল দপ্তর। সেখানে কাজের অভিজ্ঞতা ও পুলিশ ভেরিফিকেশনের উপরই জোর দেওয়া হয়েছিল। 
এই পদক্ষেপ সম্পর্কে কী বলছে শিক্ষামহল? তাদের মতে, গতবার শেষ মুহূর্তে যেভাবে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল সরকারকে, তা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। ফলে, এবার আর সেরকম পরিস্থিতি হতে দিতে চাইছে না সরকার। তাই শুধু ডিআই'দের রিপোর্টের উপরই ভরসা করতে পারছেন না দপ্তরের কর্তারা। জেলার পুলিশ ও প্রশাসনিক প্রধানদের থেকেও সেই সব নাম সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছে শিক্ষা দপ্তর। যে যে শিক্ষকের নাম দিল্লিতে পাঠানো হবে, তাঁদের নিয়ে যেন কোনও বিতর্ক না থাকে, সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। 
এ নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, একজন শিক্ষকের সম্পর্কে ডিএম-এসপি’র থেকে জানার প্রয়োজন পড়ল কেন? তাহলে কী সরকার আশঙ্কা করছে, যাঁদের নাম উঠে আসছে, তাঁদের নামে কোনও অভাব-অভিযোগ রয়েছে! অন্যদিকে, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, সরকার এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, যেখানে তারা নিজেদের অফিসারদেরই বিশ্বাস করতে পারছে না। তাই ডিএম-এসপি’দের রিপোর্ট চাইছে। এটা অত্যন্ত অপমানজনক।